রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম ::
মাদক ব্যবসার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার আজহারীর মাহফিল থেকে ফেরার পথে শিক্ষার্থীর মৃত্যু সুনামগঞ্জে ১৯জন হাফেজকে সংবর্ধনা আজহারীর মাহফিলের আগেই কানায় কানায় পূর্ণ মাঠ সৌদি আরবে ২১ হাজার প্রবাসী গ্রেফতার যেসব গুণ থাকলে আল্লাহর প্রিয় হওয়া যায় দুই তারকা ছাড়াই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণা ভারতের ঠান্ডা, সর্দি-কাশির উপশমে খেতে পারেন যেসব খাবার প্রথম পর্বে ৭৩৫ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল বাংলাদেশে ঢুকে গাছের ডাল কাটল বিএসএফ সুনামগঞ্জে সীমান্তজুড়ে কঠোর অবস্থানে বিজিবি সিলেটে সীমান্তে ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ হবিগঞ্জে সীমান্ত এলাকায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নেপালকে হারিয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা বাংলাদেশের লাউয়াছড়ায় পর্যটকের ভিড়ে অস্বস্তিতে বন্য প্রাণী




‘হারিছ চৌধুরীকে কখনও মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়নি’

dhakatoday1725426034bdzas - BD Sylhet News




বিডিসিলেট্ ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীকে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী। আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ নমুনা দেওয়া শেষে তিনি এ কথা বলেন।

সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ আমার রক্তের নমুনা নিয়েছে। আমার বাবা মরহুম আব্দুল হারিছ চৌধুরীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর আমার বাবার মরদেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর সিআইডি আজ আমাকে ডেকেছে নমুনা সংগ্রহের জন্য। এখন আব্বুর ডিএনএর ম্যাপিং চলছে। এখন আমার ডিএনএ’র নমুনার সঙ্গে আব্বুর ডিএনএ’র নমুনা মেলাবে। এরপর সিআইডি এই নমুনা মেলানোর ফলাফল দেবে। সিআইডি বলেছে এই প্রক্রিয়ার সম্পন্ন হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগবে। তবে প্রক্রিয়াটা জটিল। তারা আমাকে বলেছে যত দ্রুত সম্ভব তারা এটা সম্পন্ন করবে।

এই মুহূর্তে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার কি প্রয়োজন রয়েছে? প্রশ্ন করা হলে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বলেন, আমি বলেছি আমার বাবা মারা গেছে, কিন্তু গত সরকার এটা মেনে নেয়নি। তাহলে কি আমার বাবাকে আমি জীবিত রেখে দিব, তা না হলে কাউকে আমার বাবাকে খুঁজে দিতে হবে। আমার বাবা তো নিরুদ্দেশ থাকতে পারেন না। কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলে এটার একটি সার্টিফিকেট লাগবে। তিনি তো যেমন তেমন মানুষ ছিলেন না। যেমন তেমন মানুষেরও মানবিক অধিকার থাকে। আমার আব্বুর মানবিক অধিকার রক্ষা হয়নি।

ওই সময় হারিছ চৌধুরীর মরদহ এভাবে কেন কবর দেওয়া হয়েছিল প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার আব্বুর মরদেহ আমি আমার দাদুর বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমি দেখলাম গণমাধ্যম অহরহ রিপোর্ট করছে মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীর দাফন। এটা আসলে সঠিক নয়। আমার প্রশ্ন কে তাকে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করেছে? ওখানে যারা দাফন করেছেন তাদের সঙ্গে আমার কখনো কথা হয়নি। ওইখানের হুজুর মহিলা মানুষের সঙ্গে কথা বলেন না সেটা আমাকে বলা হয়েছিল। আমি তখন সদ্য মৃত বাবার মরদেহ বুকে নিয়ে যাওয়া মেয়ে। সে সময় আমি তো কাউকে কিছু বলিনি।

তিনি বলেন, যখন বিষয়টি সবার সামনে আসে, তখন আমার কাছের দুইজন সাংবাদিক আমার কাছে বিষয়টি জানতে চান। তখন আমি এ বিষয়ে কথা বলি। আমি তো ওইভাবে কাউকে চিনি না। আমি যখন তাদের সঙ্গে কথা বলি তখন আমি তাদের বলেছি হ্যাঁ, আব্বু মারা গিয়েছে। আব্বুর দাফন হয়েছ, আপনারা যা শুনছেন তা সত্যি। আগের সরকারের প্রতি হিংসার পাত্র ছিল আমার আব্বু। তখনকার সময়ে বিরোধীদলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক মামলা হয়েছে। আমার আব্বু গত সরকারের আমলে নির্যাতিত হওয়ার মধ্যে অন্যতম একজন। এ কারণে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাননি। তখন ওই সরকারের পক্ষ থেকে অপপ্রচার চালানো হয় যে হারিছ চৌধুরী লন্ডনে মারা গেছে, আবার কেউ কেউ বলে যে তিনি মারা যাননি।

তিনি আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান নামে আব্বুর মরদেহ কখনোই দাফন করা হয়নি। এ ছাড়া মানবজমিনে আব্বুর মৃত্যুকে নিয়ে যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল সেখানেও এই ধরনের কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। আমি আমার আব্বুকে মাহমুদুর রহমান বলে দাফন করিনি, আমি আমার আব্বুকে দাফন করেছি। আমি যখন সত্যি কথা বলি তখন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ভয় পায়। যাদের মাধ্যমে আব্বুর মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। তখন তারা আমার কাছে সার্টিফিকেট চায়। এরমধ্যে মানবজমিনে এ বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়।

আপনি আপনার বাবাকে দাফন করেছেন। তারপরও এখন ডিএনএ নমুনা দিতে হচ্ছে এই বিড়ম্বনার পেছনে কারা দায়ী প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এই বিড়ম্বনার জন্য গত সরকার দায়ী। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত প্রশাসন এর জন্য দায়ী। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি এবং স্বৈরাচারামূলক আচরণের কারণে আমাকে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী সিআইডিতে আসেন। তার বাবা হারিছ চৌধুরীর মরদেহ শনাক্তের জন্য আদালতের নির্দেশে তিনি সিআইডিতে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিতে আসেন।

এর আগে ঢাকা জেলার আদালতের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে গেছে, ২০২১ সালে ঢাকার সাভারে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা লাশটি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর কি না, তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। হারিছ চৌধুরীর মেয়ের এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে লাশটি উত্তোলন করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা। ডিএনএ পরীক্ষার পর মরদেহটি হারিছ চৌধুরীর কি না, সেটি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি যেহেতু বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তাই তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার প্রদান করাসহ তাকে দাফনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন...











বিডি সিলেট নিউজ মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। © ২০২৪
Design & Developed BY Cloud Service BD