রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০২ পূর্বাহ্ন
ইসলাম ডেস্ক : আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা যখন নামাজ আদায়ের ইচ্ছা করবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করো। তোমাদের মাথা মাসেহ করো এবং পদযুগল গোড়ালি পর্যন্ত ধৌত করো। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তা হলে ভালোভাবে পবিত্র হও।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পবিত্রতা ছাড়া কোনো নামাজ কবুল হয় না।খিয়ানতের সম্পদ দিয়ে সদকা কবুল হয় না।’(বুখারি, হাদিস: ৪২৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির হাদাস হয় (অপবিত্র থাকে) তার নামাজ হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে অজু করে।’
(বুখারি, হাদিস: ১৩৫)
শরিয়ত নির্দেশিত পন্থায় পানি বা মাটি দিয়ে পবিত্র অর্জন করাকে তাহারাত বলা হয়। তাহারাত বা পবিত্রতা অর্জনের পদ্ধতি মোট তিনটি—
১. অজু করা।
২. গোসল করা।
৩. তায়াম্মুম করা।
অজু ও গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করার জন্য পানি প্রয়োজন আর তায়াম্মুম করার জন্য প্রয়োজন মাটি। সাধারণত সমুদ্র, নদী-নালা, ঝরনা, কুয়া, টিউবওয়েল ও বৃষ্টির পানি পবিত্র এবং এর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ। নাপাক জিনিস মিশ্রিত হওয়ার কারণে যদি পানির রঙ, গন্ধ বা স্বাদ পরিবর্তিত হয়ে যায়, তা হলে সেটা নাপাক পানি বলে বিবেচিত হয় এবং সে পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা শুদ্ধ হয় না। (নায়লুল আওতার, ১/৩৫)
এ ছাড়া গোসল বা অজুতে যে পানি ব্যবহার করা হয় তাকে পরিভাষায় ব্যবহৃত পানি বলা হয়। এ পানি পবিত্র কিন্তু এর দ্বারা দ্বিতীয়বার পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না। (বুখারি, হাদিস: ৩২)
পবিত্রতা অর্জন বা নাপাক দূর করার জন্য কিংবা অজু-গোসল করার জন্য পানির ব্যবস্থা না থাকলে অথবা পানির সংকট দেখা দিলে কিংবা পানির ব্যবহারে অসুস্থ হওয়ার শঙ্কা বা অসুখ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে তায়াম্মুম করে নিতে হবে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘আর তোমরা অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অথবা তোমাদের কেউ শৌচাগার থেকে বের হলে কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর (পবিত্রতা অর্জন করার জন্য) পানি না পেলে পবিত্র ভূমি থেকে তায়াম্মুম করবে। চেহারা ও হাতে তা (মাটি) মাসেহ করবে।’(সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আমার ওপর গোসল ফরজ হয়েছিল কিন্তু পানি না থাকায় আমি মাটিতে গড়াগড়ি করেছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) এভাবে হাত দিয়ে মাটিতে চাপড় দাও বলে নিজেই দুই হাত দিয়ে মাটিতে চাপড় দিলেন এবং চেহারা মাসেহ করলেন। পুনরায় দুই হাত দিয়ে মাটিতে চাপড় দিলেন এবং দুই হাত কনুইসহ মাসেহ করলেন।’ (বাইহাকি, ১/২০৭)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের দুই হাতের তালু মাটির ওপর মারলেন এবং উভয় হাতে ফুঁ দিলেন। তারপর দুই হাত দিয়ে মুখমণ্ডল মাসেহ করলেন। এরপর দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করলেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৩৮)
তায়াম্মুমের দুই ফরজ—
এক. সমস্ত মুখমণ্ডল মাসেহ করা। (দারাকুতনি, হাদিস : ৭১২)
দুই. দুই হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করা। (দারাকুতনি, হাদিস: ৬৯৭)