শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন
বিডিসিলেট ডটকম : সিলেটে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা তাজুল ইসলাম হত্যা মামলার রায়ে সাত আসামির যানজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালতের বিচারক। রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস এ রায় ঘোষণা করেন। মামলায় মোট ১৬ আসামির ৯ জনকে অব্যহতি দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেট মহানগরের কুয়ারপাড় ইঙ্গুলাল সড়কের ৪৮ নং বাসার মৃত মহরম খানের ছেলে শাকিল ওরফে পিচ্চি শাকিল (২৪), পাশ্ববর্তী খুলিয়াটুলা নিলীমা৬৯ বাসার মৃত ধলা মিয়ার ছেলে সবুজ ওরফে টুকাই সবুজ (২৮), একই এলাকার নিলীমা ৫১ নং বাসার মো. আব্দুল আলীমের ছেলে আল-আমিন ওরফে জেটলি (২৭), কলাপাড়া কুষ্ট হাসপাতাল কুয়াটারের গোপাল দাসের ছেলে মিঠুন দাস ধর্মান্তরিত মিন্টু আহমেদ, কুয়ারপাড় ৮নং ইঙ্গুলাল রোডের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে আব্দুল ওয়াহাব কাইয়ুম (৩৮), নগরের ঝেরঝেরি পাড়ার আব্দুর রবের ছেলে তোফায়েল আহমদ ও আব্দুর রহিম।
নিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মফুর আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার তাজুল ইসলাম নগরের খুলিয়াটুলা নীলিমা-৫২/৪ নেহার মঞ্জিলের বাসিন্দা ও সিসিকের বর্তমান সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানুর স্বামী। তিনি বিএনপির অংগসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন।
২০১৬ সালের ২০ আগস্ট রাত ১০টার দিকে নগরের কুয়ারপার সংলগ্ন খুলিয়াটুলা গরমদেওয়ানের মাজার সংলগ্ন সড়কে সিলেট সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানুর স্বামী তাজুল ইসলামকে কুপিয়ে খুন করা হয়। হত্যাকারীরা্ প্রথমে তার চোখে মরিচ ও চুন ছিটিয়ে অন্ধ করে এরপর ঘাতকরা কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার রাতেই অভিযান চালিয়ে নারীসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।
পরে ২৩ আগস্ট নিহতের স্ত্রী শাহানা বেগম শানু বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ১১ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই কোতোয়ালি থানার তৎকালীন উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. ইবাদুল্লাহ আদালতে এই মামলায় অভিযোগপত্র (নং-২২৩) দাখিল করেন। চার্জশীট থেকে তিনি ৬ জনকে অব্যহতির আবেদন করেন।
মামলার দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার ৭ আসামিকে যানজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করেন আদালত। আর ৯ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- রিপন আহমদ, আমিরুল বিক্রম, মাহবুবুর রহমান মারুফ, শেখ রিপন মিয়া, সৈয়দ হাফিজ, সৈয়দ আজিজ, গুলজার, কৃঞ্চ ও টিপু।
এরআগে ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুরে কুয়ারপাড় পুলিশ ফাঁড়ির সামনে তাজুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া ছেলে সুহান ইসলামকেও (১৮) দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পর দুর্বৃত্তরা একই কায়দায় সুহানের বাবা তাজুল ইসলামকে (৪২) হত্যা করা হয়।
তাজুলকে হত্যার আগে ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর তার বড় ছেলে রায়হান ইসলামকেও একই কায়দায় চোখে চুন ঢেলে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা।