বিডি সিলেট ডেস্ক:: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় শীঘ্রই প্রতিধ্বনিত হবে নামাজের জন্য ইসলামিক আহবান, বা “আযান”। কারণ এটিই প্রথম বড় মার্কিন শহর যেখানে মসজিদগুলিকে প্রকাশ্যে প্রতিদিন পাঁচবার নামাজের আযান সম্প্রচার করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মিনিয়াপলিস সিটি কাউন্সিল সর্বসম্মতিক্রমে শহরের শব্দ অধ্যাদেশে পরিবর্তন করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, যা বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে সকাল ও সন্ধ্যার আযানকে বাধা দিয়ে এসেছে।
কাউন্সিল অফ আমেরিকান ইসলামিক রিলেশনস (CAIR) মিনেসোটা শাখার ডিরেক্টর জয়লানি হুসেন প্রস্তাব অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এটি আমাদের সমগ্র জাতির জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বহুত্ববাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক বিজয়।” “আমরা মিনিয়াপলিস সিটি কাউন্সিলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই এই মহান উদাহরণ স্থাপন করার জন্য, এবং আমরা অন্যান্য শহরকে এটি অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করছি।”
এই প্রস্তাবটি মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসে অনুমোদিত হল যাতে শহরের স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা আনন্দ প্রকাশ করেছে। সিটি মেয়র আগামী সোমবার এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মিনিয়াপলিসের আন-নূর মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ দুকুলি বলেন, “মিনিয়াপলিস সব ধর্মের জন্য একটি শহরে পরিণত হয়েছে।”
শহরটি গত বছর সালাতের আযান সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু শুধুমাত্র সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে। মিনিয়াপোলিসে, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ভোর হয় ৫:৩০এর আগে এবং সূর্যাস্ত হয় রাত ৯টার পরে।
১৯৯০-এর দশক থেকে, মিনিয়াপলিসে পূর্ব আফ্রিকা থেকে অভিবাসীদের একটি প্রাণবন্ত সম্প্রদায় রয়েছে, এবং শহর জুড়ে অনেক মসজিদ গড়ে উঠেছে। এখানে ১৩ সদস্যের সিটি কাউন্সিলের মধ্যে তিনজন মুসলিম রয়েছে।
রেজোলিউশনটি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অসংখ্য লোকদের সমর্থন পেয়েছে, যার মধ্যে খ্রিস্টান এবং ইহুদি নেতারা রয়েছেন যারা সাম্প্রতিক গণশুনানির সময় বাড়ানোর পক্ষে কথা বলেছিলেন।
এই প্রচেষ্টাটি কোনো সমবেত জনসাধারণের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়নি। অথচ এটি এমন একটি দেশে ঘটলো যেখানে মসজিদের কার্যকলাপকে উন্নত করার প্রচেষ্টা কখনও কখনও ইসলামফোবিয়া এবং মুসলিম-বিরোধী বক্তব্যের শিকার হয়েছে।
২০১০ সালে, নিউ ইয়র্ক সিটিতে নাইন ইলেভেনে হামলার স্থান গ্রাউন্ড জিরোর কাছে একটি মসজিদ এবং কমিউনিটি স্পেস তৈরির প্রচেষ্টা, মুসলিম বিরোধী গোষ্ঠীগুলির দ্বারা ভয়ঙ্কর পুশব্যাকের মুখোমুখি হয়েছিল, অবশেষে পরিকল্পনাকারীদের প্রচেষ্টা ত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মুসলিম বিরোধী বক্তব্য এবং নীতির দিকে ঝুঁকেছিলেন। যেমন তিনি একটি “মুসলিম নিষেধাজ্ঞা” আরোপ করেছিলেন যা অসংখ্য মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের লোকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসতে বাধা প্রদান করেছিল। সূত্র: আলজাজিরা