BD SYLHET NEWS
সিলেটশনিবার, ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৭:১২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সীতাকুণ্ড বিষ্ফোরণ: মালিকপক্ষের মিথ্যাচারের কারণে এত মৃত্যু


জুন ৬, ২০২২ ৯:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিডিসিলেট ডেস্ক : সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে রেড ক্যাটাগরির রাসায়নিক হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থাকার তথ্য গোপন করেছে মালিকপক্ষ। তবে এমন রাসায়নিক রাখার অনুমতি ছিল না তাদের। পরিবেশ অধিদফতর থেকে ডিপোতে শুধু অরেঞ্জ ক্যাটাগরির পণ্য রাখার অনুমোদন ছিল। সেখানে এমন ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক রয়েছে- জানা ছিল না ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের। এর কারণেই সেখানে বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে। এদিকে, অনুমতি ছাড়া রেড ক্যাটাগরির রাসায়নিক রাখায় মালামাল ছাড়পত্র বাতিল করছে পরিবেশ অধিদফতর।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগুন লাগার পর সেখানে রাসায়নিক রয়েছে- এমন তথ্য পায়নি ফায়ার সার্ভিস। তাই অতি নিকটে গিয়ে আগুন নির্বাপণে কাজ করছিল সংস্থাটির কর্মীরা। আগুনে সেখানে এত বড় বিস্ফোরণ হতে পারে- এমন ধারণাও ছিল না কারও। তাছাড়া রাসায়নিক থাকলেও ডিপোতে ছিল না অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা। এতেই হতাহত বেশি হয়েছে। সর্বোপরি সঠিক তথ্য দিলে হতাহতের সংখ্যা কম হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয় শনিবার (৪ মে) রাত ১০টায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও আশপাশের লোকজন ছুটে যান সেখানে। তখন অনেকেই যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করেন। নিয়ন্ত্রণের কাজে লেগে পড়েন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুনের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ে ইউনিট। একইসঙ্গে ভিড় বাড়ে স্থানীয়দের। তখনও কেউ জানতো না এখানে রয়েছে, বিস্ফোরক হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। মালিকপক্ষও সতর্ক করেনি। পানি পেয়ে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বোমায় রূপ নেয়। একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরণে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়। আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮২ জন। মৃতের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৯ জন কর্মীও রয়েছেন। রাসায়নিকের সঠিক তথ্য দিলে এত হতাহত না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাসায়নিক না থাকার কথা বলে বিএম কনটেইনার ডিপো অরেঞ্জ ক্যাটাগরির ছাড়পত্র নিয়েছিল। কিন্তু রেড ক্যাটাগরির রাসায়নিক রাখায় ছাড়পত্র বাতিল করছে পরিবেশ অধিদফতর।’

বিস্ফোরক পরিদফতরের পরিদর্শক তোফাজ্জল হেসেন বলেন, ‘রাসায়নিক থাকার তথ্য গোপনের কারণে বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে। সঠিক তথ্য দিলে হতাহতের ঘটনা এড়ানো যেত মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।’

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী প্রশিক্ষণ পরিচালক মনির হোসেন বলেন, ‘রাসায়নিক থাকার ঘোষণা না দেওয়ায় হতাহত বেড়েছে। স্বাধীনতার পর একসঙ্গে এত ফায়ার সার্ভিস কর্মীর আর মৃত্যু হয়নি।’

তবে বিকডার সভাপতি নুরুল কাউয়ুম খান বলেন, ‘এটি কমপ্লায়েন্স ডিপো ছিল। এটি নিছক দুর্ঘটনা। হাজার কোটি টাকার রফতানি পণ্য পুড়েছে।’

এদিকে, বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পর নিজেদের ভুল স্বীকার করছেন বিএম কনটেইনার ডিপোর মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত মেজর শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।

এই ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটলো- তা এখনও জানা যায়নি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কীভাবে রাসায়নিক ডিপো করা হয়েছে- তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।