রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : ঘরের মাঠে বিদায়ী টেস্ট খেলতে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার কথা ছিল সাকিব আল হাসানের। যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনাও হয়েছিলেন। কিন্তু দুবাইয়ে এসে থমকে গেছে সেই যাত্রা। নিজের নিরাপত্তার কারণে শেষ পর্যন্ত ফেরা হচ্ছে না বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটারের।
বাংলাদেশের শীর্ষ এক অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে বৃহস্পতিবার একথা নিশ্চিত করেছেন সাকিব নিজেই।
“দেশে ফেরার কথা ছিল… কিন্তু এখন হয়তো ফিরতে পারব না সিকিউরিটি ইস্যুর জন্য, আমার নিজের নিরাপত্তার জন্যই…।”
শেষ পর্যন্ত সাকিবের দেশে ফেরা না হলে কানপুর টেস্টই হয়ে থাকছে তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।
সদ্য শেষ হওয়া ভারত সফরের দ্বিতীয় টেস্টের আগে সাকিব ঘোষণা দিছিলেন, মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেস টেস্ট খেলতে চান তিনি। এজন্য বার বার নিরাপত্তার প্রসঙ্গ সামনে এনেছেন তিনি। হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় দেশে ফেরা ও পরে নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়ার নিশ্চয়তা চেয়ে জানিয়েছিলেন আকুতি।
তবে বিসিবি সভাপতি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে শুরুতে কঠোর বার্তা দিলেও সাকিব ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নীরব ভূমিকার জন্য ফেসকুব পোস্টে দুঃখ প্রকাশের পর সবার সুর নরম হতে থাকে। কদিন আগে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছিলেন, সাকিবের দেশে ফেরা ও পরবর্তীতে দেশ ছেড়ে যাওয়ায় কোনো বাধা তিনি দেখেন না। দেশের ক্রিকেটের সেরা তারকাকে মাঠের নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তাও তিনি দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার মিরপুর টেস্টের জন্য ১৫ জনের স্কোয়াডে ৩৭ বছর বয়সী ক্রিকেটারকে রাখেন নির্বাচকরা।
তবে গত কয়েক দিনে মিরপুরে স্টেডিয়ামের আশেপাশে চলছে নানা চৎপরতা। হয়েছে দেয়াল লিখন। স্লোগান মিছিলও হয়েছে। সাকিবের পক্ষে ও বিপক্ষে দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান এবং কিছুটা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার সাকিবের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তার দেশে ফেরা ঠেকাতে ফেসবুকে খোলা হয়েছে ইভেন্ট। তার দেশে ফেরা ঠেকাতে একটি পক্ষ বৃহস্পতিবার বিসিবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছে।
সব মিলিয়ে সাকিব দেশে ফিরলে মিরপুর ও এর আশেপাশে নিরাপত্তার অবনতি দেখা দেওয়া শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মধ্যে এমন অবস্থা বিশ্ব মঞ্চে দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। এমন ভাবনা থেকেই সংশ্লিষ্ঠরা সাকিবকে আপাতত দেশে ফিরতে মানা করছেন বলেও খবর বের হয়েছে।
আইসিসির সভায় অংশ নিতে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ এখন আছেন দুবাইয়ে। ঠিক যেখানে এসে থমকে গেছে সাকিবের দেশে ফেরার পথ।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত অগাস্টে পতন হওয়া স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন সাকিব। এরপর তার নামে ঢাকার আদাবর থানায় হয়েছে হত্যা মামলা।
মামলায় জড়িত হওয়ার পরও অবশ্য দেশের হয়ে খেলেছেন পাকিস্তান ও ভারত সফরে। বিসিবি ও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সাকিবের খেলতে বাধা নেই। তারই ধারাবাহীকতায় ছিলেন আগামী ২১ অগাস্ট থেকে মিরপুরে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলেও।
সবকিছু যখন পক্ষেই ছিল তখন আবারও বদলে গেল দৃশ্যপট। তার মানে ৭১ টেস্টেই হয় থেমে যেতে পারে সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার।
আসছে বিপিএলে সাকিবের খেলার কথা চিটাগং কিংসের হয়ে। সেটাই এখন ঝুলে গেল অনিশ্চয়তার সুতোয়।