সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যকেন্দ্র জাউয়াবাজারের একটি দোকানকোটার দখল পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি পক্ষ। আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে দোকানকোটায় বর্তমান অবস্থানকারী অন্যপক্ষকে উচ্ছেদ করতে গত ১৩ অক্টোবর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগে ওই পক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয় (মামলা নং-২০(৩১২)/২৫, তারিখঃ ১৮/১০/২০২৫)।
কিন্তু পুলিশ গ্রেফতার করার আগেই এজাহারভূক্ত চতুর আসামীগণ গত ২২ অক্টোবর সুনামগঞ্জ জেলা আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়ে আসেন। জামিন পেয়েই আসামীপক্ষ বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তারা গতকাল ২৯ অক্টোবর বুধবার দিনের বেলা জোরপূর্বক তালাবদ্ধ দোকানকোটার সামনে নতুন সাইনবোর্ড প্রতিস্থাপন করে জবরদখল করার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে জাউয়াবাজার তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে দোকানকোটা দখলের চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে আসামীপক্ষকে নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, ১৩ অক্টোবর সোমবার দুপুরে স্থানীয় জাউয়া গ্রামের মৃত সুনু মিয়ার ছেলে চিহ্নিত দাঙ্গাবাজ রফিক মিয়া (৪৮), মৃত খানুর মিয়ার ছেলে সুমন জাকারিয়া (৩৫), রফিক মিয়ার ছেলে আনহার মিয়া (২৩) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী জোরপূর্বক বিরোধপূর্ণ দোকানকোটায় আকস্মিক ঢুকে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। যা দোকানকোটায় থাকায় সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। ওইদিনও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করে। এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশে দোকানকোটায় বর্তমান অবস্থানকারী রওশন খান সাগর বাদী হয়ে থানায় উপরোক্ত মামলা করেন।
জাউয়াবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহমদ জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশে রওশন খান সাগর গংদের পক্ষ দোকানকোটায় অবস্থান করছেন। ১৩ অক্টোবর প্রতিপক্ষ গুলনাহার বেগমের পক্ষের লোকজন দোকানকোটা দখলের উদ্দেশ্যে আকস্মিক হামলা চালায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সুত্র জানিয়েছে, দোকানকোটার মালিকানা নিয়ে ব্যবসায়ী মোঃ রওশন খান সাগর গং এবং প্রতিপক্ষ গুলনাহার বেগম গংদের দীর্ঘদিন থেকে মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছিল। এ অবস্থায় আদালতের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গত ১৪ মে রওশন খান সাগর গংদের পক্ষে দোকানকোটার মালিকানা সমঝে দেন। এরপর থেকে দোকানকোটায় নির্বিবাদে রওশন খান সাগর গং পক্ষের লোকজন অবস্থান করছেন।
বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, এরআগেও অনুরূপ আদালতের নির্দেশে ক্রোকাবদ্ধ থাকা অবস্থায় ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষ গুলনাহার বেগমের ছেলে নুরুল আলীর নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী আদালত অবমাননা করে এবং সরকারি সিলগালা ভেঙ্গে দোকানকোটা জোরপূর্বক দখল করার অপচেষ্টা চালায়। পরেরদিন খবর পেয়ে রওশন খান সাগর গংদের পক্ষ অভিযোগ দায়ের করলে ছাতক থানার পুলিশ তদন্ত শেষে গত ৮ ফেব্রুয়ারি নন এফআইআর -১৯/২৫ মূলে ১৮৮ ধারায় আদালতে প্রতিবেদন পেশ করে, যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় আছে।
এমতাবস্থায় একটি দোকানকোটা নিয়ে বার বার হামলার ঘটনায় জাউয়াবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহমদসহ বাজারের ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা গুলনাহার বেগম গংদের অন্যায় কার্যকলাপে উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বলেন, যেহেতু দোকানকোটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে, সেহেতু বার বার হামলার ঘটনা ঘটিয়ে বাজারের পরিস্থিতি বিপদসংকুল করে তোলা কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে তারা আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 
 
                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                 
                                 
                                 
                                