BD SYLHET NEWS
সিলেটবুধবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ধর্মান্তর থেকে গোপন বিয়ে, ধর্মেন্দ্র-হেমার প্রেমজীবন


নভেম্বর ২৫, ২০২৫ ৪:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিনোদন ডেস্ক : অনেক বছর কেটে গেছে, তবু ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর প্রেম নিয়ে এখনো চর্চা হয়। প্রেম, দেখা, একসঙ্গে কাজ করা থেকে বিয়ে; তাঁদের জীবনের গল্প যেন সিনেমার মতো। ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর নতুন করে আলোচনায় হেমা মালিনীর সঙ্গে তাঁর প্রেম।

ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর প্রথম দেখা
হেমা মালিনী তাঁর আত্মজীবনী ‘হেমা মালিনী: বিয়ন্ড দ্য ড্রিম গার্ল’-এ তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ নিয়ে লিখেছেন, ‘আমি যখন স্টেজে ডাক পেয়েছিলাম, একা হাঁটতে হয়েছিল; খুব লজ্জিত ছিলাম। তখন রাজ কাপুরের সঙ্গে একটি ছবি শেষ করেছিলাম, কিন্তু ছবি এখনো মুক্তি পায়নি। স্টেজের দিকে হাঁটতে হাঁটতে শুনতে পেলাম ধর্মেন্দ্রজি শশী কাপুরকে পাঞ্জাবি ভাষায় বলছেন, “মেয়েটি খুব সুন্দর”। আমি সেটা উপেক্ষা করলাম। পরে আমাকে পরিচয় করানো হলো রাজ কাপুরের “ড্রিম গার্ল” হিসেবে। স্টেজে ধর্মেন্দ্রজি ও শশী কাপুরের সঙ্গে থাকতে পেরে আমি কতটা নার্ভাস ছিলাম, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’

১৯৭০ সালে ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ সিনেমার সেটে ধর্মেন্দ্র-হেমার সাক্ষাৎ ঘটে। তখন ধর্মেন্দ্রর দুই সন্তান—সানি ও ববি দেওলের বাবা। কিন্তু হেমা মালিনীর সঙ্গে দেখা মাত্রই কিছু বদলে যায়। শুরু হয় আলোচিত এক প্রেমকাহিনি। এক সাক্ষাৎকারে হেমা বলেন, ‘ধর্মেন্দ্রকে প্রথম দেখার মুহূর্তে আমি বুঝে গিয়েছিলাম—আমার জীবনের জন্য এমন মানুষই চাই।’

পর্দার সঙ্গী থেকে বাস্তব প্রেম
ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী পর্দায় একসঙ্গে ৪২টি সিনেমায় কাজ করেছেন। এসব সিনেমার মধ্যে আছে ‘শোলে’, ‘সীতা আউর গীতা’, ‘নসীব’, ‘আলিবাবা অউর ৪০ চোর’, ‘আন্ধা কানুন’, ‘ছোট্ট সি বাত’, ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ ইত্যাদি।

প্রথম বিয়ে ও অন্যান্য
ধর্মেন্দ্র ১৯৫৭ সালে প্রকাশ কৌরকে বিয়ে করেন। ১৯৭০-এর দশকে হেমা মালিনীর সঙ্গে কাজ করার সময় তাঁকে ভালোবেসে ফেলেন। তখন তাঁদের সম্পর্ক বলিউডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়ে ওঠে। কিন্তু খুব বেশি সময় না যেতেই, ধর্মেন্দ্র অন্য এক অভিনেত্রীর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। এই সময় তিনি অভিনেত্রী অনীতা রাজের প্রেমে পড়েছিলেন। পেশাদারি সম্পর্ক থেকে তাঁদের সম্পর্ক যখন ব্যক্তিগত দিকে দিকে যাচ্ছিল তখন সেই আঁচ ধর্মেন্দ্রর দাম্পত্য জীবনেও পড়ে।

হেমা মালিনী যখন এই সম্পর্কের খবর পান, তিনিও কষ্ট পেয়েছিলেন। হেমা মালিনী তখন ধর্মেন্দ্রকে সতর্ক করেছিলেন। ধর্মেন্দ্র সতর্কবার্তাটি বুঝতে পেরে অনীতার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখেন, সময়ের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে তাঁরা আর একসঙ্গে কাজ করেননি। অনীতা রাজ ১৯৮৬ সালে পরিচালক সুনীল হিঙ্গোরানির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

গোপন বিয়ে
হেমা ও ধর্মেন্দ্র পাঁচ বছর প্রেম করেছেন। এটা নিয়ে দুই পরিবারেই ঝামেলা হয়। হেমার বাবা বিয়েতে রাজি ছিলেন না। হেমা স্পষ্ট করেছিলেন, তিনি ধর্মেন্দ্রকে বিয়ে করেছেন, কিন্তু কখনো তাঁর প্রথম পরিবারে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য নয়।

অবশেষে ১৯৭৯ সালে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে তাতেও তৈরি হয়েছিল বিপত্তি। ধর্মেন্দ্রর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ বিচ্ছেদে রাজি ছিলেন না, তাই হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী বৈধভাবে বিয়ে করা সম্ভব হচ্ছিল না। সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ধর্মেন্দ্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে হেমাকে বিয়ে করেন। ধর্মেন্দ্র পরিবর্তন করে হন দিলাওয়ার খান, আর হেমা হন আইশা বি আর চক্রবর্তী। বিয়ে হয় গোপনে, মাত্র দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে। পরে হেমার দক্ষিণ ভারতীয় পারিবারিক রীতি অনুযায়ী একটি আইয়েঙ্গার স্টাইলের প্রথাগত বিয়ের অনুষ্ঠান হয়।
১৯৮১ সালের ২ নভেম্বর তাঁদের প্রথম কন্যা এশা দেওলের জন্ম হয়। চার বছর পর ১৯৮৫ সালের ২৮ জুলাই ঘরে আসে দ্বিতীয় কন্যা আহানা দেওল।

হেমা সম্পর্কে প্রকাশ
১৯৮১ সালে স্টারডাস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ধর্মেন্দ্রর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর বলেন, ‘কেবল আমার স্বামী কেন? যেকোনো পুরুষই হেমাকে পছন্দ করতেন। আমার স্বামীকে নারী প্রেমিক বলা কীভাবে কেউ সাহস করতে পারে? অনেক নায়কই তো আবার বিয়ে করেছেন। হয়তো তিনি সেরা স্বামী নন, তবে নিঃসন্দেহে সেরা পিতা। সন্তানেরা তাঁকে খুব ভালোবাসে। তিনি কখনো তাদের অবহেলা করেননি।’

প্রকাশ কখনো হেমাকে দোষারোপ করেননি। তবে বলেছেন, নিজে একই জায়গায় থাকলে তিনি হেমার মতো কাজ করতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি হেমার অনুভূতি। তাঁকে পৃথিবীর, আত্মীয় ও বন্ধুদের সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু আমি যদি হেমার জায়গায় থাকতাম, আমি হেমার মতো কাজ করতাম না। একজন স্ত্রী ও মা হিসেবে আমি এটা করতে পারি না।’ হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।