BD SYLHET NEWS
সিলেটমঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:১১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইউটিউব দেখে কমলা চাষে হাবিবুরের সাফল্য


নভেম্বর ১৭, ২০২৫ ৭:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পরিবারের অমতে চার বছর আগে কৌতূহল ও আগ্রহ থেকে ইউটিউব দেখেই পাঁচ বিঘা জমিতে চায়না জাতের কমলা চাষ করেন হাবিবুর। এরপর আত্মবিশ্বাস আর কঠোর পরিশ্রমে অবশেষে পেয়েছেন সফলতা।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বেগমপুর গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ে সারি সারি কমলার বাগান। দূর থেকেই টের পাওয়া যায় পাকা কমলার মিষ্টি গন্ধ।

হাবিবুর বলেন, ‘ইউটিউবে দেখলাম দেশে-বিদেশে অনেকেই কমলা চাষ করছে। ভাবলাম আমিও চেষ্টা করে দেখি। এরপর সাহস নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে চায়না জাতের কমলার চারা রোপণ করি। এতে প্রতিবেশীদের কটু কথা আর বাবার বকুনি খেতে হয়েছে। রাগ করে বাড়িতে তিন দিন পর্যন্ত ভাত খাইনি। তার পরও হাল ছাড়িনি।’

হাবিবুর আরো বলেন, ‘শুরুর বছরগুলোতে পরিচর্যা, সার-পানি ও রোগবালাই নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিলাম বেশি। ধীরে ধীরে চারাগুলো বড় হলো।

তিন বছরের মাথায় দেখা দিল ফুল ও ফল।’ তিনি বলেন, ‘এ বছর বাগানের দৃশ্যটাই আলাদা। প্রত্যেক গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে হলুদ কমলা। কোথাও কাঁচা, কোথাও আধাপাকা, আর কোথাও পুরোপুরি রং ধরেছে। বাগানজুড়ে যেন উৎসবের আমেজ।

হাবিবুর জানান, তার বাগানের প্রত্যেক গাছে তিন থেকে পাঁচ মণ করে কমলা হয়েছে। খরচ হয়েছে পাঁচ লাখ টাকার মতো। তিনি আশা করছেন, এবার প্রায় ২৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন। তিনি জানান, কমলার বাজারও বেশ জমজমাট। প্রতিদিন মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, এমনকি দূর জেলা থেকেও মানুষ আসছে বাগানটি দেখতে।

বাগানের কর্মচারী সোহাগ বলেন, ‘আমি এই কমলা বাগানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত থাকি এবং দেখা শোনা করি। প্রতিদিন অনেক মানুষ আসে কেউ কমলা কিন্তে কেউবা বাগান দেখতে।’

দামুরহুদা থেকে কমলা কিনতে আসা ব্যবসায়ী সমরেশ বলেন, ব্যবসা জীবনে অনেক জায়গা থেকে কমলা কিনেছি। তবে এই কমলাটা অন্য কমলার চেয়ে বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদু।

দর্শনার্থী মইন উদ্দিন বলেন, লোকমুখে শুনে কোটচাঁদপুর থেকে কমলা বাগান দেখতে এসেছি। আসলেই এই কমলা মিষ্টি ও সুস্বাদু যা অন্য কমলার চেয়ে ভিন্ন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে হাবিবুর জানান, তিনি আরো জমি নিয়ে বাগান বড় করতে চান। পাশাপাশি কমলা সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য একটি আধুনিক গুদাম ও প্যাকহাউস নির্মাণের ইচ্ছাও রয়েছে তাঁর।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ‘মহেশপুর অঞ্চলের মাটি সব ধরনের ফল চাষের জন্য উপযোগী। কমলা, মাল্টা ও লেবু জাতীয় ফসলে এখানে ভালো ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। হাবিবুরের বাগানটি আমাদের জন্যও একটা সফলতার উদাহরণ।’

কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘মাটি ও আবহাওয়া কমলা চাষের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় ফলনও ভালো হচ্ছে। রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক পরিচর্যা নিয়ে সব ধরনের পরামর্শ আমরা দিয়ে যাচ্ছি।’

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।