সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরফিন টিলার পাথর গত দেড় মাস থেকে ফের নানাপন্থায় লুট শুরু হয়েছে। এবার পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে অভিনব কৌশল নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। যে রাস্তা দিয়ে পাথর পরিবহন করা হয় সেই রাস্তায় ট্রাক্টর আটকাতে দেওয়া হয়েছে লোহার পাইপের ব্যারিকেড। এছাড়াও শাহ আরেফিন টিলার সাথে সংযুক্ত সকল রাস্তায় এস্কেভেটর দিয়ে কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে টিলা থেকে কোনো গাড়ি বের হতে না পারে।
শাহ আরেফিনের পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। ইতিমধ্যে পাথর উত্তোলন পরিবহন মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত থাকায় প্রায় ১৫ জনকে জেল জরিমানা দেওয়া হয়েছে। তার পরেও বন্ধ হচ্ছে না শাহ আরেফিনের পাথর উত্তোলন।
গত ১০ নভেম্বর শাহ আরেফিন টিলা পরিদর্শনে আসেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।
তিনি ওই সময় বলেন, যেকোনো মূল্যে বন্ধ করা হবে শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর উত্তোলন। সেই সাথে আইনের আওতায় আনা হবে দুষ্কৃতকারিদের। জেলা প্রশাসকের এমন হুঁশিয়ারির পর কিছুটা বন্ধ হয় পাথর উত্তোলন। পাথরের গর্ত থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয় লিস্টার মেশিন। তবে এরমধ্যেও ব্যতিক্রম ছিলেন দুই-চারজন, যারা ডিসির হুঁশিয়ারির পরও মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করতে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জালিয়ারপাড়ের বাবুল আহমদ ও চিকাডহরের আব্দুর রহিম চালিয়ে যান এই দুঃসাহসী কাজ। তারা শাহ আরেফিনের মাজার ও মাজারের আশপাশ থেকে মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করতে থাকেন। তাদের এই দুঃসাহসে উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যরাও পাথরের গর্তে মেশিন বসাতে শুরু করেন। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫/১৭টি গর্তে মেশিন বসানো হয়েছে।
জানা যায়, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে রাস্তায় লোহার পাইপ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে শাহ আরেফিনের রাস্তার সংযোগ স্থানে বসানো হয়েছে এই ব্যারিকেড। দুইপাশে লোহার খুঁটি ও উপরে লোহার পাইপ দিয়ে বসানো এই ব্যারিকেড দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। তবে বড় গাড়ি পার হতে হলে উপরের লোহার পাইপ খুলে দিতে হবে। এজন্য সেখানে আনসার ও গ্রাম পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন, শাহ আরেফিন টিলার পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। এর মধ্যে আমরা প্রায় ১৫ জনকে আটক করে জেলে দিয়েছি। নতুন করে মামলা দেওয়া হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, শাহ আরেফিন টিলার পাথর যাতে কেউ পরিবহন করতে না পারে সেজন্য আমরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছি। তাছাড়া শাহ আরেফিন টিলার সাথে সংযুক্ত সকল রাস্তা এস্কেভেটর দিয়ে কেটে দেওয়া হবে।
