সুনামগঞ্জের ছাতকে সৎ ভাইয়ের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে খালে ফেলে দেন স্ত্রী। র্যাবের অভিযানে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী স্ত্রী ও সৎ ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) র্যাব-৯ কর্তৃক একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, নিহত মো. জিয়াউর রহমান সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার মহদী এলাকার একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে ভিকটিমের স্ত্রী জিয়াউরের ভাইকে জানান যে, মহদী গ্রামের আন্দোয়া খালের মধ্যে একটি বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে স্ত্রী ও ছেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি দেখে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানান। পরে স্ত্রী তার ভাসুরকে বলেন, ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে তার স্বামী নিখোঁজ রয়েছেন।
র্যাব আরও জানায়, ভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে স্ত্রী ও ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সাদা রঙের একটি প্লাস্টিকের বস্তা মুখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। ভিকটিম নিখোঁজ হওয়ার পর ভাইকে কেন জানানো হয়নি জানতে চাইলে স্ত্রী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে বস্তার মুখ খুললে ভিকটিমের স্ত্রী লাশটি তার স্বামীর বলে সনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের ছাতক থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে মামলটির তদন্ত র্যাব-৯ কে দেওয়া হলে তারা গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে। তথ্যের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯, সিপিসি-৩, সুনামগঞ্জের একটি আভিযানিক দল ৭ নভেম্বর রাত ৩টা ৫ মিনিটে ছাতক থানার সিংচাপউর ইউনিয়নের গহরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলাটির মূল আসামি ও ভিকটিমের স্ত্রী রানু বেগমকে (৩৭) গ্রেফতার করে। তিনি নিহত জিয়াউর রহমানের স্ত্রী এবং ছাতক থানার গহরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে ২৬ অক্টোবর মামলার অন্যতম প্রধান আসামি ও ভিকটিমের সৎ ভাই মো. বাবুল মিয়াকে র্যাব-৯ গ্রেফতার করে। তদন্তে জানা যায়, রানু বেগমের সঙ্গে তার স্বামীর সৎ ভাই বাবুল মিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের জেরে তারা পরস্পর যোগসাজশে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বস্তাবন্দি অবস্থায় খালে ফেলে দেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ছাতক থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
