রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
বিডিসিলেট ডেস্ক : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার (৯ অক্টোবর)। উৎসবের প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে। প্রতিমা সাজানোর পাশাপাশি এ উৎসবকে কেন্দ্র করে সিলেট নগরের মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে কেনাকাটা।
পূজা উপলক্ষে কাপড়ের মার্কেট ও শোরুমগুলোতে নারীদের জন্য সাজিয়ে রাখা থ্রি পিস, জামদানী শাড়ি, কাতান শাড়ি, লেহেঙ্গা ও তাঁতের শাড়ি। ছেলেদের জন্য রয়েছে বাহারি ডিজাইনের ধুতি, শর্ট পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট। বাচ্চাদের জন্য সাজিয়ে রাখা পোশাকগুলোতেও বাহারি রঙ।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরের শুকরিয়া মার্কেট, ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, সিটি সেন্টার, হাসান মার্কেট ও মধুবন সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে সব মার্কেটেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। বিকেল থেকে শুরু হচ্ছে কেনাকাটা। বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভিড় করছেন দোকানে দোকানে। কিনছেন পছন্দের পোশাক।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার নারীদের সালোয়ার-কামিজের চাহিদা বেশি। কাতান, জর্জেট, সিল্ক ও এমব্রয়ডারি দিয়ে কাজ করা শাড়ির প্রতি আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। কদর রয়েছে জামদানি শাড়িরও। ছেলেদের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবি ও দেবী দুর্গার ছবি সম্বলিত টি-শার্টের চাহিদা রয়েছে।
পূজার কেনাকাটা করতে আসা সম্পূর্ণা রায় বলেন, ‘সারাবছর দুর্গাপূজার জন্য অপেক্ষা করি। নিজের এবং পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করতে বের হয়েছি। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার কাপড়ের দাম বেশি মনে হচ্ছে। পূজার আগে যেসব শাড়ি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হতো, সেগুলোর এখন দাম চাইছে ২ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করাটা এক প্রকার দুরূহ ব্যাপার হয়ে গেছে।’
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা দেবাশীস দাস বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা পূজার আনন্দ বাড়িয়ে দেয়। পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হয়েছি।’
ব্যবসায়ীরা জানান, ‘সব ধরনের ক্রেতারা আসেন বিধায় অধিকাংশ দোকানেই ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০-১৫ হাজার টাকা দামের শাড়িও রয়েছে। অধিকাংশ ক্রেতাই কিছুটা কম দামের শাড়ি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দোকানে খোঁজ করছেন। তারাও ক্রেতাদের চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী শাড়ি দেখাচ্ছেন। এ বছরও বেচাকেনা বেশ ভালো।’
কাপড়ের বাজারের সঙ্গে জুয়েলারি বাজারেও ভিড় বেড়েছে। নারীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন চুড়ি, গলার হার, আংটিসহ নানারকম জুয়েলারি। পূজা ঘনিয়ে আসায় মার্কেটগুলোর পাশাপাশি অনলাইনেও বেচাকেনা বেড়েছে।
যদিও বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ক্রেতা বাড়লেও আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছে না। ষষ্ঠী পূজার পূর্ব পর্যন্ত পূজার বাজারে ক্রেতারা থাকবেন বলে মনে করছেন তারা।
নগরের শুকরিয়া মার্কেটের এক ব্যবসায়ী নতুন সিলেট-কে বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মানুষ পোশাক কিনছে কম। তাই পূজার বাজার মন্দা।’
এদিকে, দুর্গাপূজায় সিলেটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। নিয়মিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব, আনসার-ভিডিপি ও পুলিশ প্রশাসন। এছাড়া পূজাকালীন নিরাপত্তা ও বিভিন্ন বিষয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী এ বছর সিলেটে জেলায় ৪৪১টি এবং মহানগরে ১৫৪টি মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে।