মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১১ অপরাহ্ন

শিরোনাম ::
সকল ফাঁসির আসামীদের পূর্ণ বিচারের আগ পর্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনের দাবিতে মানববন্ধন নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে: বাসদ সিলেটে নদী থেকে ইটভাটা শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার টাংগুয়ার হাওরে ৮ লাখ টাকার জাল, নৌকাসহ আটক ১৬ মালয়েশিয়ায় বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু সিলেটে চিনিকান্ডে দুই বিএনপি নেতা স্থায়ী বহিস্কার আ.লীগের যেসব নেতা গ্রেফতার হয়েছেন এইচএসসি পরিক্ষায় ৫৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল খাবার ধীরে ধীরে খাওয়ার উপকারিতা সিলেট শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৭৭.৭৮ শতাংশ সাংবাদিক হেনা মমোর পিতার মৃত্যুতে অনলাইন প্রেসক্লাবের শোক সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় আপেল জব্দ বড়লেখায় খাল থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার মৌলভীবাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১




সুনামগঞ্জে পর্যটন স্পষ্টগুলো অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে

Untitled 14 copy 3 - BD Sylhet News




বিশ্বম্ভরপুর প্রতিনিধি : হাওরাঞ্চলে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ধান ও মাছ। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মাদার ফিশারিজ খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো। ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে পর্যটন স্পষ্টগুলো।

এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার সৌন্দর্যপিপাসু পর্যটক ও দর্শনার্থীর আগমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পর্যটন স্পটগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আঁকাবাঁকা নদী, হাওর, পাহাড় বিস্তৃত তিন হাজার ৭৪৭ বর্গকিলোমিটারের এই জেলায় প্রায় ২৫ লাখ মানুষের বসবাস। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন খুব বেশি না হলেও প্রতিবছর হাওর এলাকায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।

টাঙ্গুয়ার হাওর, লাউর রাজ্যের রাজধানী হলহলিয়া, শহীদ সিরাজ লেক, শিমুল বাগান, শাহ আরেফিন (রহ.)-এর মাজার, বাঁশ বাগানসহ পর্যটক আকর্ষক নানা স্থানের দূরত্ব জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের তাহিরপুর উপজেলায়।

যার সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন হাজার হাজার পর্যটক। কেউ জেলা শহর থেকে কেউবা তাহিরপুর সদর থেকে শতাধিক হাউস বোটে চড়ে দেখছেন স্পষ্টগুলো। যেখানে পর্যটকদের খাওয়াদাওয়াসহ রাত্রিযাপনের সুবিধা দিয়ে প্রতিটি হাউস বোট এক রাত দুই দিন পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখাতে ভাড়া নিচ্ছে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা বা এরও বেশি। এ ছাড়া স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ২০০-৩০০ পর্যটকবাহী ট্রলারও হাওরে চলছে তবে হাউস বোটের ভাড়ার চেয়ে অনেক কমে।

পর্যটকদের কাছে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছে হাওর পারের মানুষ। শুধু পণ্যই নয় পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়ানো, ইঞ্জিনচালিত নৌকা, মোটরসাইকেলচালক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, পর্যটকদের বিভিন্ন ধরনের গান শোনানোসহ নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অর্থ উপার্জন করছে হাওর পারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।

তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, টাঙ্গুয়ার হাওরে ২০১৯ সালে দুই লাখ পর্যটক আসে। ২০২০ সালে করোনা মহামারি থাকায় পর্যটক কমে যাওয়ার পরও লাখখানেক পর্যটক আসে। ২০২১ সালে প্রায় সাড়ে তিন লাখ, ২০২২ সালে পাঁচ লাখ, ২০২৩ সালের সাড়ে পাঁচ লাখ পর্যটক ও ২০২৪ সালে বন্যাসহ নানা কারণে পর্যটকের আগমন কম ছিল, তবে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিন লাখ পর্যটক হাওর এলাকার পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখেছে।

টাঙ্গুয়ার হাওর পারের বাসিন্দা সামাদ মিয়া একসময় বেকার ছিলেন। গত সাত-আট বছর ধরে পর্যটকদের কাছে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রতিদিনই টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নৌকা থামলেই চা-বিস্কুট, চিপসসহ বিভিন্ন পণ্য তার ছোট নৌকায় করে নিয়ে যান। পর্যটকরা তার কাছ থেকে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করেন। এভাবে সারা দিন চলে তার এক নৌকা থেকে আরেক নৌকায় ছুটে চলার ব্যস্থতা। দিন শেষে কোনো দিন এক হাজার আবার কোনো দিন আরো বেশি টাকা আয় করেন তিনি। তার মতো টাঙ্গুয়ার হাওরে আরো ৩০-৩৫ জন একই কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছন।

পর্যটক জিয়াউর রহমানসহ ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, হাওর এলাকায় পর্যটন স্পটগুলোতে যে হারে প্রতিবছর পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে সে হারে সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে না, বরং সুবিধা নেই বললেই চলে। সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হতো এই জেলা। এর পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীলরাও উপকৃত হতো।

টাঙ্গুয়ার হাওরতাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ মোরাদ বলেন, ‘হাওর এলাকার অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে। আরো হবে যখন সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার সুফল পাব, তখন হাওর এলাকার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সহজেই মানুষ যেতে পারবে। এর ফলে পর্যটক ও সৌন্দর্যপিপাসুদের আগমন বাড়বে, হাওর পারের মানুষের জীবন-জীবিকাও পরিবর্তন হবে।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘হাওরে যারাই ঘুরতে আসবেন তারা যেন পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবে পরিবেশের ক্ষতি করা যাবে না। এ ছাড়া আগত পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষে থেকে নজরদারি রাখা হয়।’

শেয়ার করুন...











বিডি সিলেট নিউজ মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। © ২০২৪
Design & Developed BY Cloud Service BD