বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
বিডিসিলেট ডেস্ক : ইয়াসমিন হত্যা দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম সিলেট জেলার উদ্যোগে শনিবার (২৪ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম সিলেট জেলার আহ্বায়ক মাসুমা খানমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক আবু জাফর, সদস্য সচিব প্রণব জ্যাতি পাল, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা, মহিলা ফোরামের কলি আক্তার, শিউলি আক্তার, অর্চিতা শর্মা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মামুন বেপারি প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্ট ইয়াসমিন ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাতে পুলিশ কর্তৃক ধর্ষিত ও হত্যার শিকার হয়েছিলেন। পরেরদিন দিনাজপুরে প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে ৭ জন সংগ্রামী মানুষকে। এরপর আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের কোন অপচেষ্টাই আন্দোলন নস্যাৎ করতে পারেনি। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে বিচারে ধর্ষক ও খুনিদের ফাঁসির রায় এবং ২০০৪ সালে তা কার্যকর হয়। ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ও বিচারের রায় মানুষের মনে এক প্রতিবাদী চেতনার জন্ম দেয়। এই আন্দোলন এবং হত্যার স্মরণে প্রতিবছর ২৪ আগস্ট পালিত হয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বিচারহীনতা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক বলয় অপরাধ প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্ষণের মামলায় ৯৭ শতাংশেরই কোন সাজা হয় না। ফলে অপরাধী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অর্থ ও ক্ষমতার বলয়ে থাকলে খুন-ধর্ষণ যেকোন অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, এই হচ্ছে বাস্তবতা! মুনিয়া হত্যা, তনু হত্যার বিচার না হওয়া সেটাই প্রমাণ করে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পুঁজিবাদী ভোগবাদী সমাজে ও মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে নারী মানুষ হিসেবে অধিকার ও মর্যাদা পান না। মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে নারী ভোগের বস্তু। ফলে আভরণে ঢেকে, নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করে ভোগের সর্বোত্তম ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করা হয়। অন্যদিকে পুঁজিবাদে নারীর সস্তা শ্রম ও দেহ পণ্যে পরিণত হয়। নারী মুনাফা লাভের এক বড় ধরণের মাধ্যম বা পণ্যে পরিণত হয়।। বাংলাদেশে এই দুইয়ের প্রভাব ব্যাপকভাবে উপস্থিত।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘নারী নির্যাতন সমাজ বিচ্ছিন্ন কোন বিষয় নয়। যে সমাজে বৈষম্য প্রকট, সে সমাজে নির্যাতন একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস এই অন্যায়কে গুড়িয়ে দেয়ার শিক্ষা দিয়ে যায়। নারী শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন। ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়।’