BD SYLHET NEWS
সিলেটসোমবার, ৩১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:০১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঘুষখোর প্রসঙ্গে মুহাম্মদ (সা.) যা বলেছেন


এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইসলাম ডেস্ক : কোনো ক্ষমতাধর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার জন্য যা কিছু প্রদান করা হয়, তাকে ঘুষ বা উৎকাচ বলা হয়। কারো কারো মতে, অন্যায়ভাবে কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠা বা বাতিল করার নিমিত্তে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অর্থ বা অন্য কিছু প্রদান করাকে ঘুষ বলে। কেউ কেউ বলেন, ঘুষ হচ্ছে স্বাভাবিক ও বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থের ওপর অবৈধ পন্থায় অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করা। একেক প্রতিষ্ঠানে একেক নামে এটি পরিচিত।

নাম বদল করে অনেকে এ অপরাধ হালকাভাবে দেখতে চান। কিন্তু ঘুষ ঘুষই, তা যে নামেই ডাকা হোক না কেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে একজন কর্মচারী কিছু মাল এনে বলল, এটা আপনাদের (সরকারি) মাল, আর এটা আমাকে দেওয়া হাদিয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সে তার মা-বাবার ঘরে বসে থাকল না কেন, তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না? (বুখারি, হাদিস : ২৫৯৭)

ঘুষ বা উৎকাচ আসে হাদিয়া বা উপহারের রূপ ধারণ করে।অথচ ইসলামে হাদিয়া জায়েজ, কিন্তু ঘুষ হারাম। ঘুষ ও হাদিয়ার মধ্যে পার্থক্য হলো, হাদিয়ায় আর্থিক কোনো লাভের উদ্দেশ্য থাকে না, কিন্তু ঘুষে আর্থিক লাভের আশা থাকে।

ঘুষখোর আমানতের খিয়ানতকারী : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি যাকে ভাতা দিয়ে কোনো কাজের দায়িত্ব প্রদান করেছি, সে যদি ভাতা ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করে তাহলে তা হবে আমানতের খিয়ানত। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৯৪৩)

আর খিয়ানতকারীকে মহান আল্লাহ পছন্দ করেন না। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আমানতের খিয়ানতকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫৮)

ঘুষখোর মজলুমের বদদোয়ার শিকার : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তুমি মজলুমের বদদোয়া থেকে বেঁচে থাকো। কেননা মজলুমের বদদোয়া ও আল্লাহর মধ্যে কোনো পর্দা নেই। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৮)

অর্থাৎ মজলুমের দোয়া ব্যর্থ হয় না। তা ছাড়া কিয়ামতের দিন অন্যের সম্পদ ভক্ষণকারী জালিমের কাছ থেকে তার নেকি হতে মজলুমের বদলা পরিশোধ করা হবে।নেকি শেষ হয়ে গেলে মজলুমের পাপ জালিমের ওপর চাপানো হবে। পরিশেষে তাকে নিঃস্ব অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৩৪)

ঘুষ কিয়ামতের দিন ঘুষখোরের কাঁধে চেপে বসবে : রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত জনৈক কর্মচারীর হাদিয়া গ্রহণের কথা শুনে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি ঘোষণা দিলেন, ওই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে নিয়ে কিয়ামত দিবসে উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, গাভি হলে হাম্বা হাম্বা শব্দ করবে এবং বকরি হলে ভ্যা ভ্যা করতে থাকবে। (বুখারি, হাদিস : ২৫৯৭

ঘুষখোররা ইবাদত ও দান-খয়রাত করেও ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত : রাসুলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত, ধুলা মলিন এলোকেশে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, সে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করছে, হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম। আর তার দেহও হারাম উপার্জন দ্বারা গঠিত। তার প্রার্থনা কবুল হবে কিভাবে? (তিরমিজি, হাদিস : ২৯৮৯)

অর্থাৎ হারাম ভক্ষণ করায় তার প্রার্থনা কবুল হবে না, যদিও মুসাফিরের প্রার্থনা সাধারণত কবুল হয়ে থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৩৬)

নিরুপায় হয়ে ঘুষ দিলে তার বিধান : যে ব্যক্তি নিজের কোনো ন্যায্য প্রাপ্য জিনিস বা অধিকার আদায়ের জন্য নিরুপায় হয়ে ঘুষ দেয় এবং কারো জুলুম থেকে বাঁচার জন্য অনন্যোপায় হয়ে ঘুষ দেয়, তার ওপর অভিসম্পাত পতিত হবে না। তবু এমন পরিস্থিতিতে ঘুষ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও না দেওয়াই উত্তম।

ঘুষ থেকে বাঁচার উপায় : ঘুষ থেকে বাঁচার উপায় হলো পরকালের ভয়, সম্পদের লোভ বর্জন, আল্লাহভীতি, পার্থিব শাস্তির ব্যবস্থা ও গণসচেতনতা।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।