মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
বিডিসিলেট ডেস্ক : দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা জুড়ী নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে জুড়ী ইউনিয়নের জুড়ীর পার এলাকার এক-চতুর্থাংশ ঘরবাড়ি। এরইমধ্যে অনেকে হারিয়ে ফেলেছেন শেষ সম্বলটুকুও। সর্বস্ব হারানোর আশঙ্কা নিয়ে দিন পার করছেন বাকি বাসিন্দারা।
উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের জুড়ীর পার নামক এলাকা দিয়ে ভারত থেকে নেমে আসা জুড়ী নদী বয়ে গেছে। নদীটির সর্বশেষ গতিমুখ হাকালুকিতে গিয়ে মিশেছে। বৃষ্টির সময় উজান থেকে নেমে আসা পানি নদীপাড়ের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পাড় ভেঙে নিয়ে যায়। এ সময় ভাঙনে বিলীন হয় ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা। সাম্প্রতিক ভাঙনে নদীপাড়ের অন্তত ১০-১২টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। আতঙ্কে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুড়ীর পার নামক স্থানে প্রায় ৭০-৮০টি পরিবারের বসবাস। বিভিন্ন সময় নদীভাঙনে এ এলাকার বাসিন্দা মখলিছ মিয়া, আয়াজুল ইসলামসহ অনেকেরই পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি নদীতে চলে গেছে। তাদের মতো এ এলাকার এবাদুল্লাহ, সুলতান মিয়া, সুলেমান আহমদ, হাইবুন বেগম, ময়না মিয়া ও দুলা মিয়ার বাড়ির সীমানাও এখন নদীতে। ভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। সর্বশেষ ভাঙন পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য চলতি মাসে এখানে এসেছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী। গত সপ্তাহে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন। এ সময় এলাকার শতাধিক মানুষ উপস্থিত থেকে তাঁর কাছে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
ভাঙনের কারণে নদীতে বিলীন হয়েছে জুড়ীর পার এলাকার প্রধান গ্রামীণ রাস্তাটি। এ রাস্তা দিয়ে ৪-৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াত হলেও জুড়ীর পার গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান এবং একমাত্র রাস্তা এটি। স্থানীয় ইসলাম উদ্দীনের চাচা জালাল উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার ইসলাম উদ্দীনের বিয়ে ছিল। এ উপলক্ষে রাস্তার ভাঙা অংশের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়োছে প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচে। স্থানীয় পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম রুয়েল জানান, নদীভাঙন থেকে রাস্তা এবং গ্রামের ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য এ নদীর পাড়ে ব্লক দেওয়া অথবা দ্রুত কাজে আসে (ইমার্জেন্সি প্রজেক্ট) এমন প্রকল্প নেওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন জানান, বর্ষাকালে নদীতে পানির স্রোত বেশি থাকে। নদীর গতিপথ বদলে যায়। পাড়ের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙনের মুখে পড়ে নদীপাড়ের স্থাপনা। এ ব্যাপারে পরিকল্পিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।