রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ অপরাহ্ন
বিডিসিলেট ডেস্ক : হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সেবা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক উন্নয়নের নামে দানবাক্স বসিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সুব্রত কুমার হালদারসহ কর্মরতরা দীর্ঘদিন ধরে এ টাকা আদায় করে আসছেন। এমনকি হতদরিদ্র রোগীরা ওষুধ আনতে ক্লিনিকে গেলে দানবাক্সে টাকা দেওয়ার পর তাদের ওষুধ দেওয়া হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তারা জানান, ওষুধ আনতে গেলেই কমিউনিটি ক্লিনিক উন্নয়নের দানবাক্সে টাকা দিতে হয়। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, রোগীদের থেকে এটি বাধ্যতামূলক নেওয়া হয় না। যেসব রোগীর ইচ্ছে হয় তারাই দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন করে হেলথকেয়ার প্রোভাইডার দায়িত্বে রয়েছেন। এসব ক্লিনিকে প্রান্তিক হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা দিতে সরকারের পক্ষ থেকে রোগীদের বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এতে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন।
সরেজমিনে পৌরসভার আজিমনগরে অবস্থিত আজমিরীগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে দেখা যায়, আজমিরীগঞ্জ সিসি লেখা একটি কাঠের বাক্স ঝোলানো রয়েছে। এ সময় ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী ওষুধ নিতে গিয়ে ওই বাক্সে টাকা দিচ্ছেন। কেউ ৫ টাকা আবার কেউ ১০ টাকা দিচ্ছেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের কয়েকজন সেবাগ্রহীতা অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই ক্লিনিক থেকে ওষুধ আনতে গেলেই টাকা দিতে হয়। ওষুধ থাকা সত্ত্বেও তারা দেয় না। যে কারণে বাধ্য হয়েই আমরা টাকা দিচ্ছি।’
সেবাগ্রহীতা ফরজান বিবি বলেন, ‘আমি ওষুধ নিতে এলে তারা বাক্সে টাকা দিতে বলেন। তাই আমি ১০ টাকা দিয়েছি। ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও দানবাক্সে টাকা না দিলে তারা ওষুধ দেন না। তাই টাকা দিয়েই ওষুধ নিয়েছি।’
আরেক সেবাগ্রহীতা রাজু মিয়া জানান, ক্লিনিকে এসে দেখেন অনেকেই দানবাক্সে টাকা দিচ্ছেন। তাই তিনিও ১০ টাকা দিয়েছেন। কেন দিয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘ক্লিনিক থেকে ওষুধ নিতে গেলে টাকা দিতে হয়। তাই টাকা দেওয়ার পর আমাকে এক পাতা (১০টি) প্যারাসিটামল ও কিছু আয়রন ট্যাবলেট দিয়েছে তারা।’
ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা সুব্রত হালদার বলেন, ‘ক্লিনিকের উন্নয়নের জন্য সেবাগ্রহীতারা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী দানবাক্সে টাকা দিচ্ছেন। কেউ তাদের টাকা দিতে বাধ্য করেনি। আমরা সবাইকে বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশে ক্লিনিকে দানবাক্স বসানো হয়েছে বলে তিনি জানান।’
বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ক্লিনিকে ৫০ থেকে ১০০ জন সেবাগ্রহীতা সেবা নিচ্ছেন। ক্লিনিকের টুকটাক উন্নয়ন কাজের জন্য সেবাগ্রহীতাদের থেকে দান নেওয়া হচ্ছে। তারা নিজ ইচ্ছায় দান করছেন। কেউ তাদের টাকা দিতে বাধ্য করেনি।