শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৬ অপরাহ্ন
বিডিসিলেট প্রতিবেদক : সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী এনডিসি বলেছেন, ভূমিকম্প নিয়ে আতংক নয় সকল ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। ভুমিকম্প কখন হবে কেউ বলতে পারবে না। তাই সবসময় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। বিল্ডিং তৈরীর করার সময় অবশ্যই বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সিলেটের জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘ভূমিকম্প-প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ভূমিকম্প নিয়ে ব্যাপক ভাবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। যে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় একটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী বাহিনী ও ব্লাড ডোনার তৈরী করতে হবে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস কতটা প্রস্তুত আছে বিভাগীয় কমিশনার জানতে চাইলে। ফায়ার সার্ভিস সিলেটের কর্মকর্তা জানান, আমাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবলের প্রচন্ড সংকট রয়েছে।
এসময় বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী জানান, সিলেট বিভাগে বিভিন্ন স্তরে ২০ হাজার শূণ্য পদ রয়েছে । আমি এগুলো নিয়ে কাজ করছি।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান, এসএমপির পুলিশ কমিশনার মো: ইলিয়াস শরীফ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শাবিপ্রবির সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম।
তিনি তাঁর প্রবন্ধে বলেন, সিলেট সীমান্তে রয়েছে ডাউকি ফল্ট। যাকে বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোন বলা হয়। ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ মাত্রার ২০ টি ভূমিকম্প হয়েছে। তিনি বলেন বারবার ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পেরই আভাস বলছেন বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ। আবার অন্য একটি অংশ বলছেন বারবার ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্প না হবার সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয়।
ভারতের আসাম, মেঘালয়, ডাউকি এলাকায় অনেকগুলো সক্রিয় ফল্ট রয়েছে। এসব ফল্ট প্রায়ই ঝাঁকুনি দিয়ে সরে যেতে চাচ্ছে। এতে প্রায়ই ছোট ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে। যদি বড় ভূমিকম্প হয় তাহলে সিলেট অঞ্চলে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বড় ভূমিকম্পের প্রভাব দেশের অন্যান্য জেলাতেও পড়বে। কারণ একটি বড় ভূমিকম্প হলে এর স্থায়িত্ব এবং ব্যাপ্তি বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকা জরুরি।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন, বিয়ানীবাজার উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, ক্যাব সিলেটের সভাপতি জামিল চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আল আজাদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বৃন্দ।
প্রায় সকল বক্তাই ভূমিকম্প নিয়ে সেমিনার আয়োজন করার জন্য জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এ আয়োজন অত্যন্ত সময়োচিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক উপস্থিত সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন সিলেটের প্রতিটি সমস্যা নিয়ে আমি একে একে কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে সকলের সার্বিক সহযোগীতা আমার খুবই প্রয়োজন।
ভূমিকম্প নিয়ে জমজমাট এই সেমিনার প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা চলে।