বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
বিডি সিলেট ডেস্কঃ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধ ছাদ উদ্দিন আহমদ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে প্রার্থী হতে সকল মহলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
তিনি বিগত সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন। তার এ প্রার্থীতার জীবন বৃত্তান্ত বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌছে দিবে বলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এ বিষয়টির সমাধানও হয়ে যায়।
ছাদ উদ্দিন আহমদ ১৯৬৭ সালে সিলেট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করে এম.সি কলেজে ভর্তি হন। কলেজে পড়াশুনার পাশাপাশি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৬ সালে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু সিলেট কারাগারে বন্দী থাকাকালে তাঁর মুক্তির দাবীতে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৯ সালে আইয়ূব সরকার বিরোধী আন্দোলনের গণঅভ‚্যত্থানে অংশ নেন। ১৯৭০ সালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চের জনসভা ও ৭ই মার্চে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় অংশ গ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার লক্ষ্যে ১২ এপ্রিল ভারতের ট্রেনিং সেন্টারে যান। ভারতের আগরতলার কলেজ টিলা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণকালীন সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে সে সময় শেখ ফজলুল হক মনি তার শ্রীধর ভিলার বাসায় নিয়ে যান। তিনি সুস্থ হয়ে আসামের একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে মুজিব বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে একটি গ্রুপের কমান্ডারের দায়িত্ব নিয়ে ১৬টি অপারেশনের নেতৃত্ব দেন।
১৯৭১ সালের ২৩-২৪ মার্চ তৎকালীন সিলেট শহরে আম্বরখানা থেকে টিলাগড় পর্যন্ত ব্যারিকেড দিয়ে পরিখা খনন করেন। এ সময় পাকবাহিনীর মুখোমুখি হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অল্পের জন্য বেঁচে যান।
১৯৭২ সালে এম.সি কলেজের অনেক সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা মুজিব আদর্শের সাথে বেইমানী করে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে যোগ দিলে তখন ছাদ উদ্দিন আহমদ মুজিব আদর্শ থেকে লক্ষ্যচ‚্যত না হয়ে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে সক্রিয় থাকায় ৪১ সদস্য বিশিষ্ট এম.সি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময় কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ লাভ করেন।
১৯৭৩ সালে এম.সি কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষে ছাদ-নূরুল প্যানেলে ভিপি পদপ্রার্থী হয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করেন। ১৯৭৪ সালে উ”চ শিক্ষার্থে যুক্তরাজ্যে গিয়ে আওয়ামীলীগের কার্যক্রমে যুক্ত হন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবার হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের আন্দোলনে যুক্ত থাকেন।
১৯৭৭ সালে তিনি সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানেও তিনি আওয়ামীলীগের কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন।
১৯৭৮ সালে সুইডেনে তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুর রাজ্জাক এর নেতৃত্বে অল ইউরোপিয়ান বাকশাল কনফারেন্স আয়োজক কমিটিতে কাজ করেন। এ কমিটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা ও তার ¯^ামী শফিক আহমদ সিদ্দিকী যোগদান করলে ইউরোপে প্রথম বারের মত বঙ্গবন্ধুর সপরিবার হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের জন্য বক্তব্য দিতে গিয়ে শেখ রেহানা সেখানে অচেতন হয়ে পড়লে ছাদ উদ্দিন আহমদ সঙ্গে সঙ্গে এ্যাম্বুলেন্স ডেকে এনে তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
১৯৮০ সালে ছাদ উদ্দিন আহমদ দেশে প্রত্যাবর্তন করে সিলেট আওয়ামীলীগের যোগ দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ২০০৫ সালে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, ২০১৩ সালে জেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে এবং ২০১৯ সালে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। এ কাউন্সিলের পর ছাদ উদ্দিন আহমদ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতির পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যক্রমে অবদান রাখায় বিগত ২০২০ সালের মুজিববর্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছাদ উদ্দিন আহমদকে সম্মাননা দিয়ে ভ‚ষিত করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাদ উদ্দিন আহমদ ১৯৫২ সালের ৩০ জুন সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মোল্লাপুর গ্রামের মুসলিম সন্তান পরিবারে মরহুম ফরজমন্দ আলীর ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী, ২ কন্যা ও ১ ছেলে সন্তানের জনক। ছেলে আহমদ রিজভী রনি পেশায় মিডিয়া এজেন্সিতে ঢাকায় কর্মরত। আহমদ রিজভী রনি’র স্ত্রী শেখ শাওলি আজম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই শেখ আলী আজমের কন্যা।