শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
পাকিস্তানের খাইবারপাখতুনখোয়ার খাইবার এজেন্সির জামরুদ এলাকায় মঙ্গলবার একটি মসজিদের ভেতরে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণে’ পুলিশের একজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।
পেশোয়ার ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ কর্মকর্তা (সিসিপিও) আশফাক আনোয়ার বলেছেন, অতিরিক্ত স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) আদনান আফ্রিদি পুলিশের দলের অংশ ছিলেন। তিনি কথিত আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীকে ধাওয়া করেছিলেন এবং বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। সন্দেহভাজন লোকের উপস্থিতির খবর পেয়ে পুলিশের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
কিন্তু সন্দেহভাজনরা পুলিশকে দেখে পালিয়ে যায় বলে তিনি জানান।আশফাক আনোয়ার বলেন, ‘ধাওয়া করার সময় তারা মসজিদে প্রবেশ করেছিল, যেখানে অতিরিক্ত এসএইচও আদনান আফ্রিদি নিহত হন। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর একজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘মসজিদটি হামলার লক্ষ্য ছিল না।লক্ষ্য কী ছিল, জানতে তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা গুল ওয়ালি বলেছেন, এলাকার বাসিন্দারা সেখানে সন্দেহজনক লোকের উপস্থিতি সম্পর্কে পুলিশকে সতর্ক করেছিল।
তথ্য তত্ত্বাবধায়ক প্রাদেশিক মন্ত্রী ব্যারিস্টার ফিরোজ জামাল শাহ কাকাখেল বিস্ফোরণের নিন্দা করেছেন এবং পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আফ্রিদির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার দুঃখের সময়ে নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।
‘পুলিশের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। দুর্বৃত্ত ও শান্তির শত্রুদের কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে।’
এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে খাইবারে ঘটা দ্বিতীয় বিশিষ্ট সন্ত্রাসী হামলা এটি। বৃহস্পতিবার খাইবার এজেন্সির বড় বাজার সংলগ্ন তহসিল সদর দপ্তর কমপ্লেক্স এবং থানার প্রবেশদ্বারে পুলিশ সদস্যরা দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীকে আটক কর। পুলিশ বলেছে, তারা বোমারুদের সঙ্গে একটি বন্দুক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
ফলে একজন হামলাকারী মারা যায় এবং অন্যজন নিজেকে উড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া বিস্ফোরণের প্রভাবে ভবনটির একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে তিন পুলিশ সদস্য নিহত হন এবং তিন বেসামরিক নাগরিকসহ ১০ জন আহত হয়।
গত বছরের নভেম্বরে নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শেষ করার পর পাকিস্তানে, বিশেষ করে কেপি ও বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আক্রমণ আসে এবং বৃদ্ধি পায়।
এই মাসে থিংকট্যাংক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সন্ত্রাস ও আত্মঘাতী হামলায় স্থিতিশীল ও উদ্বেগজনক বৃদ্ধি দেখা গেছে, সারা দেশে ৩৮৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
জুন মাসে একটি সংবাদ সম্মেলনে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী এই বছর ১৩ হাজার ৬১৯টি গোয়েন্দা অভিযান পরিচালনা করেছে, যাতে এক হাজার ১৭২ জন সন্ত্রাসী নিহত বা গ্রেপ্তার হয়। এ ছাড়াও এই অপারেশনে ৯৫ জন সেনা নিহত হয়েছেন।সূত্র : ডন