সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন
সিলেটের ওসমানীনগরে প্রেমিকের ধর্ষণে ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক তরুণী। এ ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা এই তরুণী প্রেমিক জয়নালের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত শনিবার রাতে ওসমানীনগর থানা (মামলা নং-১৪) দায়ের করলে পুলিশ জয়নালকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার জয়নাল উপজেলার তাজপুর ইউপির খাশিপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে উপজেলার তাজপুর ইউপির খাশিপাড়া গ্রামের জাতীয় পার্টি নেতা সিরাজ মিয়ার ছেলে জয়নালের সাথে একই উপজেলার গোয়ালাবাজারের একটি গ্রামের ওই তরুণীর প্রথম পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে ওই তরুণীর সাথে জয়নালের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। জয়নাল প্রায় সময় প্রেমিকা তরুণীর বর্তমান বাসায় আসা-যাওয়া করত।
জয়নাল বিয়ের প্রস্তাব দিলে তরুণী রাজি হয়ে যায়। একপর্যায়ে জয়নাল তরুণীটিকে বিয়ের কথা বলে সিলেট শহরে নিয়ে গিয়ে শাহজালাল আবাসিক হোটেলে নামের একটি জায়গায় ওঠে। জয়নাল জানায়, একরাত ওখানে থাকার পরের দিন তারা কোর্টে গিয়ে বিয়ে সেরে নেবে।
হোটেলে থাকা অবস্থায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে জয়নাল মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরের দিন জয়নাল কাজী অফিসে যাওয়ার বিষয়ে টালবাহানা শুরু করলে তরুণীটি বাধ্য হয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে। পরবর্তীতে জয়নাল প্রায়ই মেয়েটির বাসায় আসা-যাওয়া করত এবং তাকে বিয়ে করার বিষয়ে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করে।
এরমধ্যে ওই তরুণী তার শারীরিক পরিবর্তন অনুভব করলে তাজপুরস্থ প্যারাডাইস হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক জানান, সে ৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি প্রেমিক জয়নালকে জানালে সে গর্ভপাত করানোর চাপ দেয়, অন্যথায় বিয়ে করবে না বলে জানায়।
গত ১৯ মে দুপুরে ওই তরুণী নিরুপায় হয়ে জয়নালের খাশিপাড়া গ্রামস্থ বাড়িতে পিতা সিরাজ মিয়াকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
এরপর ভুক্তভোগী তরুণীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ওসমানীনগর থানা পুলিশ অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নথিভুক্ত করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আমিন বলেন, অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করে তার কথিত প্রেমিক জয়নালকে গ্রেপ্তার করে, আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসিতে) ভর্তি করা হয়েছে।