শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন
বিডিসিলেট ডেস্ক : বিএনপি নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন কি না, তা আজ শরিবার জানাতে পারেন। এক মাস ধরে এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় অনেকে। তিনিও ধোঁয়াশা করে রেখেছেন বিষয়টি। বিএনপির এই প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, না করার ওপর অনেক সমীকরণ আটকে আছে।
নির্বাচনে তাঁর অংশ নেওয়া, না নেওয়ার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে বলে নগরবাসীর ধারণা। সম্ভাব্য প্রার্থীরাও আরিফের সিদ্ধান্তের আলোকে তাঁদের নির্বাচনী কৌশল ঠিক করতে পারেন।
গত ১ মে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের মিছিল শেষে নগরের রেজিস্টারি মাঠ এক সমাবেশে আরিফুল হক চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আমা?দের দল নির্বাচ?নে অংশগ্রহণ করবে না এবং কেন আমরা সি?লে?টের প্রেক্ষাপ?টে ?নির্বাচ?নে যাব—এ দু?টি বিষয় আগামী ২০ মে এই মাঠে জনতার কাছে প?রিষ্কার করব; কিন্তু রেজিস্টারি মাঠে তিনি পূর্বঘোষিত সমাবেশটি তিনি করতে পারবেন কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পুলিশ তাঁকে সমাবেশ করা অনুমতি দেয়নি।
প্যান্ডেল তৈরিতে বাধা :
গতকাল শুক্রবার মেয়র আরিফের লোকজন রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশের জন্য প্যান্ডেল তৈরি করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। খবর পেয়ে আরিফ সেখানে গিয়ে অবস্থান নেন এবং বলেন, ‘আগামীকাল (শনিবার) আবহাওয়া খারাপ থাকবে। বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় আমি আগে থেকে প্যান্ডেল তৈরি করতে চেয়েছিলাম। এখন তারা (পুলিশ) আমাকে বলছে, আপনি এখানে সমাবেশ করতে পারবেন না।
আমি এখানে বসে গেলাম-অবস্থান নিলাম। দেখি কী হয়?’
মেয়র আরিফ আরো বলেন, ‘আমি আজ থেকে ২০ থেকে ২৫ দিন আগে থেকে বারবার বলছি, নির্বাচন নিয়ে ২০ মে বিকেল ৩টায় রেজিস্টারি মাঠে আমার অবস্থান আমি পরিষ্কার করব। কোনো রাজনৈতিক দলের হিসেবে নয়, দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে আমি এ নগরের মানুষকে সেবা দিয়েছি। নগরবাসীকে আমি আমার অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই। আমি মহানগর পুলিশ কমিশনার, নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি তিন দিন আগে।
তাঁরা আমাকে কিছু জানাননি; কিন্তু আজ পুলিশ আমাকে প্যান্ডেল তৈরিতে বাধা দিয়েছে। এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ‘উনি আমাদের অবহিতকরণ পত্র দিয়েছিলেন। তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় আমরা সমাবেশ না করতে বলেছি।’ এর আগে গত বুধবার মেয়র আরিফের বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়।
কী হতে পারে আরিফের অবস্থান :
এদিকে সিটি নির্বাচনে মেয়র আরিফের অবস্থান কী হতে পারে—এ প্রশ্নে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতা ও আরিফের বেশ ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে কিছুটা আভাস পাওয়া গেছে। তাঁরা বলেছেন, আরিফুল হক কৌশলী মানুষ, অনেক ক্ষেত্রে আনপ্রেডিক্টেবল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিছু বিষয় তিনি প্রকাশ করেন না। তাঁর এই বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় না রাখলে এতটুকু বলা যায় যে আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। তবে তিনি নির্বাচনী মাঠ একেবারে ছেড়েও যাবেন না।
বিকল্প হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মতোই প্রবাসী একজন। যিনি নির্বাচনের মাঠে এখনো অনুপস্থিত। আরিফ যদি আজ নির্বাচনে অংশ না করার ঘোষণা দেন, সে ক্ষেত্রে ওই প্রবাসী নেতা দেশের পথে রওনা হবেন।
বিএনপির আরেকটি সূত্র জানায়, আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে দোটানায় ছিলেন গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়েও তাঁর শঙ্কা বেড়েছে। দলের কঠোর মনোভাবও প্রভাব রেখেছে। এসব উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বেশি ঝুঁকি হবে বলে মনে করছেন আরিফ।
বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত যতটুকু জানি তাতে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়, আরিফুল হক চৌধুরী এবার নির্বাচন করবেন না। তবে একেবারে শেষ মুহূর্তে কী করবেন, তা তিনি ছাড়া আর কারো পক্ষে ধারণা করা কঠিন।’ তবে নির্বাচন না করলেও আরিফ হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘মেয়র আরিফুল হক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদিও নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন। বাকিরাও নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবেন বলে আমার বিশ্বাস।’