মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

শিরোনাম ::
দুবাই’র স্বর্ণ সিলেটে গায়েব, তল্লাশি করে ‘কাঠগড়ায়’ এস আই বিদেশিদের কাছে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢালারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন এড.শাহজাহান চৌধুরী বিশ্বনাথে ৪ ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা বিদেশিদের সম্পত্তি কেনার অনুমতি দিচ্ছে সৌদি আরব ছাতকে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩৫ মাধবপুরে ৬ প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা বাংলাদেশের কাছে ভয় ধরিয়েও আয়ারল্যান্ডের হার জাফলংয়ে বসতঘর থেকে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার নজরুল ইসলাম বিলালের মৃত্যুতে সিলেট জেলা আ’লীগের শোক এই যুবকের পরিচয় চায় পুলিশ সিলেটে সুরমা নদীতে গোসলে গিয়ে যুবক নিখোঁজ প্রবাসীদের সংগঠন গ্লোবাল জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনে মিশিগান থেকে যারা স্থান পেলেন দুবাইয়ে ৩ কোটি টাকার লটারি জিতলেন বাংলাদেশি প্রেমিক যুগল আপত্তিকর অবস্থায় আটক, অতঃপর…




অষ্টেলিয়ায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিশুর মৃত্যু: মিশ্র প্রতিক্রিয়া

Untitled 5 copy 1 - BD Sylhet News




বিডিসিলেট ডেস্ক :: বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বাবার ‘ভুলে’ গাড়িতে আটক অবস্থায় মারা যাওয়া ৩ বছর বয়সী শিশু আরিক হাসানের বাবা নেওয়াজ হাসানের বাবার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, আজ সোমবার ময়না তদন্তের পর আরিকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই মর্মান্তিক ঘটনাটি অস্ট্রেলিয়ার মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। গণমাধ্যমগুলোর ভাষ্য, এ ঘটনায় আরিকের বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডের অভিযোগ আনতে পারে পুলিশ।

আস্ট্রেলিয়ার আইনে শিশুদের গাড়িতে একা রেখে ১ মুহূর্তের জন্যও দূরে যাওয়া বেআইনি। ১৯৯৮ সালের ফৌজদারি আইনের ২৩১ ধারায় এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর জন্য ৩ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ২২ হাজার ডলার জরিমানার বিধান আছে। আর গাড়িতে ১২ বছরের নিচের কোন শিশুকে একা রেখে যাওয়ার কারনে শিশুটি মারা গেলে তা আইন মোতাবেক হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে।

নিহত আরিকের বড় খালু চৌধুরী মোর্শেদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সকালে আরিকের মা কর্মস্থলে চলে যান। আরিকের বাবা হোম অফিস করেন। সেদিন আরিককে চাইল্ড কেয়ার কেন্দ্রে এবং বড় ছেলে আরাফকে স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার জন্য নেওয়াজ হাসান গাড়িতে রওনা হন। গাড়িতে উঠে পেছনের আসনে শুয়ে ঘুমিয়ে যায় আরিক। এরপর নেওয়াজ বড় ছেলেকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে গাড়িতে পেট্রোল নিতে নিকটবর্তী পাম্পে যান। বাড়ি ফেরার রাস্তাটি আরিকের চাইল্ড কেয়ারের সামনে হওয়ায়, সেখান দিয়ে আসার পথে তিনি ভাবেন আরিককে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি বাড়ি এসে কাজে ডুবে যান। বেলা ৩ টার আগে আরাফকে স্কুল থেকে নিয়ে আসতে বাসা থেকে বের হন তিনি। আরাফের স্কুলের কাছেই একটি সুপার শপের সামনে গাড়ি পার্ক করেন। এরপর আরাফকে নিয়ে সেখান থেকে টুকটাক বাজার করে গাড়ির পেছনে রাখতে গিয়ে দেখেন গাড়িতে আরিক শুয়ে আছে। তিনি সন্তানকে বাঁচাতে গাড়ির পেছনের কাচে ঘুষি মারেন। পরে পেছনের দরজা খুলে আরিককে বের করে এনে প্রথামিক চিকিৎসা দেন। জরুরি সেবায় কল করা হলে প্যারামেডিক এসে আরিককে মৃত ঘোষণা করেন।

তখন ওই এলাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুলিশের ভাষ্য, গাড়ির ভেতরের তাপমাত্রা ছিল প্রায় দিগুণ। আরিক উত্তপ্ত গাড়িতে আটক ছিল প্রায় ৬ ঘন্টা।

আরিক হাসানের মৃত্যুতে বাংলাদেশি কমিউনিতিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিদারুন এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

কমিউনিটির ব্যাংক্সটাউন-ক্যান্টারবুরি সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা বলেছেন, ‘আমি ৩ সন্তানের মা। তাই আমি খুব সহজেই পুরোপুরিভাবে ওই বাচ্চার বাবা-মায়ের মানসিক অবস্থা এবং অনুভূতিটি বুঝতে পারছি। আমরা কেউই ভুলের উর্ধ্বে নই। তাই এই নির্মম ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আমরা অনেক সময়ই বোঝার চেষ্টা করি না যে আমার পাশের মানুষটির মানসিক অবস্থা কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমার প্রাণপ্রিয় কমিউনিটির সবার প্রতি বিশেষ অনুরোধ যে আমরা যেন এ মুহূর্তে তাদের কটাক্ষ না করে, সমালোচনা না করে বরং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই এবং সহানুভূতি দেখাই।’

বহুজাতিক কমিউনিকেশন সংস্থা টেলিওজের সিইও জাহাঙ্গীর আলমের অভিমত হচ্ছে, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক এবং মর্মান্তিক। আমরা যারা অভিভাবক, তাদের আও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।’

অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল মতিন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াতে কোন কর্মজীবীকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যন্ত্রদানবের মত কাজ করতে হয়। শিশুটির বাবা হয়তো রাতে কাজ করেছেন এবং বড় ছেলেকে স্কুলে নামিয়ে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়েছেন। অপরদিকে শিশুটির মা কাজে ছিলেন। আমি এই পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’

বিডি হাব, সিডনি কমিউনিটি সেন্টারের সভাপতি আব্দুল খান রতন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাবার অসাবধানতায় শিশু ছেলের মৃত্যু, আমাদের কমিউনিটির জন্য একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। পৃথিবীতে কোনো বাবাই শিশুসন্তানের প্রতি বেখেয়ালি নন, এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল। প্রতিদিন কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনে আমরা যে মানসিক চাপে থাকি, এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।’

বিজয় কণ্ঠ অনলাইন টেলিভিশনের কর্ণধার মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমাদের কমিউনিটির জন্য সংবাদটা ছিলো অনেক ভয়াবহ। কাজের চাপ কমিয়ে নিজেকে ও পরিবার নিয়ে চিন্তা করা এবং সময় দেয়া আমাদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’

বগুড়া সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েতুর রহিম বেলাল জানান, শিশুটির মৃত্যু আমাদের বাঙালী কমিউনিটি তথা অস্ট্রেলিয়ার সমগ্র পরিবারকে কঠিন সতর্ক বার্তা দিয়ে গেল।’

শেয়ার করুন...











বিডি সিলেট নিউজ মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। © ২০২৩
Design & Developed BY Cloud Service BD