মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২, ০২:৩১ অপরাহ্ন
বিডিসিলেট ডটকম : সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় আজ রোববার সকালে ভারী বর্ষণের পর দুপুর থেকে থেমেছে বৃষ্টি। তবে আকাশ পরিষ্কার হয়নি। বৃষ্টি থামলেও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ি ঢল এবং ডাইক ভেঙে প্রবেশ করা পানি কমেনি।
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া অব্যাহত বৃষ্টির কারণে সিলেট সদর উপজেলায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
সিলেটের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ২১ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে বেড়ে চলেছে সিলেটের নদ-নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আজ সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ১০ দশমিক ৬২, গোয়াইনঘাটের সারি নদের পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর আমলশিদ পয়েন্টেও পানি ছিল বিপৎসীমার ওপরে।
সিলেটের জকিগঞ্জে সুরমার ছয়টি ডাইক ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার বারহাল, মানিকপুর, কাজলসার ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ এতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক শ ঘরবাড়ির লোকজন।
সুরমার ডাইক ভেঙে যাওয়ায় পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানের বীজতলা, পুকুরের মাছের ঘের। পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা থাকায় তলিয়ে গেছে জকিগঞ্জের প্রধান ডাকঘর, প্রাণিসম্পদ অফিস, স্থল শুল্ক স্টেশন, জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসা, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামের একাংশসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট।
এদিকে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ বাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে পানি প্রবেশ করেছে।
জৈন্তাপুর উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির কারণে এবং পাহাড়ি ঢলে চারটি ইউনিয়নের সব কটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্যসংকটে পড়েছেন অনেকে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যা দুর্গত ৮টি উপজেলার জন্য ১০৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বণ্টন করা হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় জৈন্তাপুরে নৌকাডুবিতে একজন ও গোলাপগঞ্জে টিলা ধসে মাটি চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহযোগিতা করা হয়েছে। এ ছাড়া টিলা এলাকায় বসবাসকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।