সোমবার, ০৮ মার্চ ২০২১, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
বিডি সিলেট নিউজ ডটকম:: লেবাননের বৈরুত বন্দরে মঙ্গলবার শক্তিশালী বিস্ফোরণে নিহত তিন বাংলাদেশির মধ্যে একজন মেহেদী হাসান। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের ভাদেশ্বরা গ্রামের তাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার বড় ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে মেহেদী ছিলেন সবার বড়।
ছোট বোন জিয়াসমিন আক্তার হ্যাপির (২২) চার বছর আগে সদর উপজেলার জাঙ্গাল গ্রামের দুবাইপ্রবাসী মাহবুব আলমের সঙ্গে বিয়ে হয়। ছোট ভাই সামিরুল ইসলাম (১৩) স্থানীয় গাউছুল আজম আবুল উলুইয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র এবং আরেক ছোট ভাই সাইমন ইসলাম (৫) স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে নার্সারিতে পড়ে।
সংসারের হাল ধরতে সুদে নেওয়া ঋণের টাকায় লেবাননে পাড়ি জমান মেহেদী হাসান। তাঁর গ্রামের বাড়িজুড়ে এখন শুধুই মাতম। ছেলের শোকে তিনদিন ধরে পানি ছাড়া কিছুই খাচ্ছেন না মা ইনারা বেগম। প্রায়ই তিনি মুর্ছা যাচ্ছেন ও অচেতন হয়ে পড়ছেন। তাঁকে চিকিৎসক দেখাতে হাসপাতালে নেওয়া দরকার। কিন্তু অভাবগ্রস্ত পরিবারের সেই টাকাও নেই।
মেহেদীর চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম, সারওয়ার হোসেন ও প্রতিবেশী সাজিম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে জানান, কোনোভাবেই তাঁরা মেহেদীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। শান্ত, নম্র, ভদ্র ও বিনয়ী স্বভাবের ছিলেন মেহেদী। গ্রামে কোনো দিন কারও সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়নি। বিশ্বাসই হচ্ছে না তিনি আর নেই।
নিহত মেহেদীর ছোট বোন জিয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘আমার দুই বছরের মেয়ে মাহিয়া আক্তার ও দুই মাসের মেয়ে মিম আক্তারের নাম রেখেছিল মেহেদী ভাই। কাজে যাওয়ার আগে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ভাই আমাকে ফোন করত। আজ দুদিন পার হলো ভাইয়ের কোনো ফোন আসেনি।’ কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই মেয়ের জন্য পাঁচ কেজি চকলেট, পুতুল, শ্যাম্পু, সাবান—কত কিছু কিনে রেখেছিল ভাই। কিন্তু দুই মেয়ে ও আমার স্বামীকে না দেখেই চলে গেল সে।’